ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫, ৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

আলোকে কঠিন পদার্থে রূপান্তর, কোয়ান্টাম বিজ্ঞানে যুগান্তকারী সাফল্য

আলোকে কঠিন পদার্থে রূপান্তর, কোয়ান্টাম বিজ্ঞানে যুগান্তকারী সাফল্য

বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো আলোকে কঠিন পদার্থে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন, যা পদার্থবিজ্ঞানে এক  যুগান্তকারী আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাধারণত, আলোকে শক্তি হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু এবার এটি একটি সুপারসলিড বা বিশেষ ধরনের কঠিন পদার্থে রূপ নিয়েছে, যার রয়েছে কঠিন এবং সুপারফ্লুইডের বৈশিষ্ট্য একসঙ্গে।

single-ad-main-1

একটি গবেষক দল এই ব্যতিক্রমী পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন এক পদার্থের সৃষ্টি করেছেন, যা শক্ত পদার্থের মতো একটি নির্দিষ্ট গঠন বজায় রাখে, কিন্তু একইসঙ্গে সুপারফ্লুইডের মতো বাধাহীন প্রবাহিত হতে পারে। গবেষণাটি ৫ মার্চ Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকদের মতে, এই সুপারসলিড ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, উপকরণ বিজ্ঞান এবং শক্তি সংরক্ষণ প্রযুক্তিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

গবেষণার অন্যতম সহ-লেখক, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অপটিক্সের বিজ্ঞানী ইআকোপো কারুসোতো বলেন, সুপারসলিডকে এমন একটি তরল পদার্থ হিসেবে কল্পনা করা যায়, যা নিখুঁত বিন্যাসে থাকা ক্ষুদ্র কোয়ান্টাম ড্রপলেট দিয়ে গঠিত। এটি বাধার সম্মুখীন হলেও কোনো পরিবর্তন ছাড়াই প্রবাহিত হতে পারে এবং তার গঠন অপরিবর্তিত থাকে

single-ad-main-2

এই সাফল্য পদার্থ বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে গবেষকরা আলোর ব্যবহারে নতুন প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে পারবেন। গবেষণা দলের সমন্বয়ক দিমিত্রিওস ট্রাইপোগিওরগোস বলেন, এটি শুধুই পারমাণবিক সুপারসলিডের একটি অনুকরণ নয়, বরং সম্পূর্ণ নতুন উপায়ে সুপারসলিড তৈরির এক বিপ্লবী পথ।

গবেষণা পরিচালক দানিয়েল সানভিত্তো বলেন, এই গবেষণা শুধু সুপারসলিড পর্যবেক্ষণই নয়, বরং এটি অস্থিতিশীল পরিবেশে নতুন কোয়ান্টাম পর্যায় বিশ্লেষণের একটি অনন্য সুযোগ তৈরি করবে। তিনি আরও বলেন, এই গবেষণা মৌলিক বিজ্ঞান ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

পাভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডারিও গেরাস যোগ করেন, এই বিশেষ ঘন সঙ্কুচিত পদার্থ (সুপারসলিড) তৈরি করার মাধ্যমে আমরা এর প্রকৃত গুণাবলি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করতে পারব এবং ভবিষ্যতে নতুন আলো নির্গমনকারী ডিভাইস তৈরিতে এর প্রয়োগ সম্ভব হতে পারে।

এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে প্রযুক্তির নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি কেবল বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী অগ্রগতি নয়, বরং বাস্তব জীবনে শক্তির ব্যবহার ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন