সকালে ভোট দিলেন ড. কামাল। দুপুরে গণমাধ্যমের সামনে এলেন সৌম্য-শান্ত ভঙ্গিতে। বললেন নির্বাচনের শুরু থেকেই মিনিটে মিনিটে ফোন পাচ্ছিলেন। আশা করছিলেন এই বোধহয় একটা ফোন পাবেন। যেটাতে তিনি শুনবেন যে, নির্বাচন ভালো হচ্ছে।
কিন্তু এরকম একটিও ফোন তিনি পাননি বলে অনুযোগ করলেন। ক’দিন আগেই নির্বাচন কমিশনে যে মারমুখী ড. কামাল ছিলেন, কাল দুপুরে তার লেশমাত্র ছিল না তাঁর চেহারায়। রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল সেটাও বাতিল করলেন। রাতে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে।
ঐ বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, হরতাল অবরোধের মতো কোনো সহিংস এবং আক্রমণাত্মক কর্মসূচির মধ্যে তিনি নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ড. কামাল আপাতত বিশ্রামে যাওয়ার অভিপ্রায়ও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিবকে।
ড. কামাল হোসেনের আচার আচরণে যেন মনে হচ্ছে তাঁর দায়িত্ব শেষ। ‘মিশন কমপ্লিট’ কিংবা ‘অপারেশন সাকসেসফুল’। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বিদেশে যাচ্ছেন। কিছুদিন ধরেই তাঁর শরীরের উপর দিয়ে ধকল গেছে।
তাঁর চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের জন্য তিনি যাননি। ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ‘অবিশ্বাস্য’ এই ফলাফলের পরও কেন শান্ত, স্নিগ্ধ ড. কামাল হোসেন? বিএনপির অনেক নেতা এখন বলছেন, ড. কামাল হোসেন আসলে সরকারের এজেন্ট। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব নিয়েই ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলেন।
অনেক বিএনপি নেতা আরেকটু আগ বাড়িয়ে বলেন, ভারতের এজেন্ট হিসেবেই ড. কামাল মিশনে নেমেছিলেন। তিনি নিজে নির্বাচন করলেন না। সারাটা সময় বললেন, ভোট বর্জন করবো না। এর অর্থ কী? বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।’
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্যই তাঁরা ভারতের মাধ্যমে ড. কামাল হোসেনকে ভাড়া করে। ড. কামাল হোসেনের একমাত্র দায়িত্ব ছিল বিএনপিকে নির্বাচনে আনা এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে রাখা। ক্ষমতার জন্য নয়, ড. কামাল হোসেন ভারতের অনুরোধে এই দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
ড. কামালের এই দায়িত্ব গ্রহণের পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপিতে এখন জোরেসোরেই ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে কথা হচ্ছে।
‘ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যাওয়ার সিদ্ধান্তটাই ছিল ভুল। জামাতের সঙ্গে যেমন কখনো আওয়ামী লীগের ঐক্য হবে না, ঠিক তেমনি সাবেক আওয়ামী লীগারদের সঙ্গেও বিএনপির ঐক্য হতে পারেনা। ড. কামালের সঙ্গে ঐক্য তার সত্যতা প্রমাণ করল। সূত্র বাংলাদেশ জার্নাল